Sunday, December 29, 2013

আওয়ামী নেতাদের এ কেমন বর্বরতা!

চরম বর্বর এক ঘটনা ঘটে গেল শিক্ষানগরী রাজশাহীতে। লজ্জা আর অবমাননাকর সেই ঘটনা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল শত শত মানুষ। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বর্বর আচরণের প্রতিবাদের সাহসও ছিল না তাদের। 

'অসম বিয়ের অপরাধে' স্বামী-স্ত্রীকে বেধড়ক পেটানোর পর জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানো হলো এলাকায়। পরে খোলা ময়দানে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী নগরীর ভাটাপাড়া এলাকায় রবিবার। আওয়ামী লীগ নেতা ্ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নির্দেশে এই ঘৃণ্য বর্বর ঘটনা ঘটায় এলাকার আওয়ামী নেতা-কর্মীরা। 

নিগ্রহের শিকার দুজন হলেন রুবেল হোসেন (২৫) ও নিলুফা বেগম (৪০)। তাঁদের মধ্যে রুবেল হোটেল কর্মচারী আর নিলুফা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। থাকেন ভাটাপাড়া এলাকার একটি বস্তিতে।


নির্যাতিতদের বক্তব্যে জানা যায়, প্রায় চার মাস আগে নিলুফার সঙ্গে তাঁর স্বামী ফজলুর রহমানের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

এরপর চার দিন আগে প্রতিবেশী যুবক রুবেল ও নিলুফা বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। রবিবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে তাঁরা বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করলে কাউন্সিলর নূরুজ্জামান টুকুর নির্দেশে রুবেল ও নিলুফাকে ধরে এনে পেটাতে থাকে। এরপর তাঁদের গলায় জুতার মালা পরিয়ে রেললাইনের ধারে মাঠে নিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই বর্বরতা দেখতে ভিড় করে এলাকার শত শত মানুষ।

এদিকে খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার খবরে পুলিশ গিয়ে রুবেল ও নিলুফাকে উদ্ধার করে। এ সময় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরুজ্জামান টুকুও সেখানে হাজির হন। 

নির্যাতিত নিলুফা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ২০-২৫ জন লোক মিলে তাদেরর দুজনকে প্রথমে লাঠি ও হাত দিয়ে পেটায়। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে পেটানোর পর গলায় জুতা-স্যান্ডেলের মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়। এভাবে ১০ মিনিট ঘুরিয়ে আনার পর মাঠের মধ্যে দুটি পাশাপাশি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে তাঁদের বেঁধে রাখা হয়।

নির্যাতনকারী স্থানীয় আজিজুল ইসলামসহ আরো অনেকের দাবি, রুবেল কদিন আগেও ওই নারীকে মা বলে ডাকত। এখন তারা বিয়ে করেছে বলে দাবি করছে। এটি মেনে নিতে না পারায় স্থানীয় কাউন্সিলরের নির্দেশে তাদের দুজনকে পেটানোর পর বেঁধে রাখা হয়। কাউন্সিলর নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্ত করা যাবে না বলেও দাবি করে তারা।

আওয়ামী লীগের নেতা কাউন্সিলর নূরুজ্জামান টুকু অবশ্য দাবি করেন, তিনি এ ঘটনা জানতেনই না। পরিবারের নির্দেশেই রুবেল ও নিলুফাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। খবর পেয়ে তিনি বরং তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন।

No comments:

Post a Comment