Tuesday, November 19, 2013

বরিশালে ৪২ কোটি টাকার দরপত্র ছিনতাই করেছে ছাত্রলীগ

গত পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকারের অন্তিম মুহূর্তেও বরিশাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রায় সাড়ে ৪২ কোটি টাকার দরপত্র (শিডিউল) ও ৭৯ লাখ টাকার ব্যাংক ড্রাফট (গ্যারান্টি) ছাত্রলীগ ছিনতাই করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় গতকাল সকালে ভুক্তভোগী ঠিকাদার সুলতান মাহমুদ সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে সোমবার রাতে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীর রূপাতলী ও বেলতলায় নির্মাণাধীন দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পানি সরবরাহের পাইপলাইন স্থাপনের জন্য চার গ্রুপের ৪২ কোটি ৩১ লাখ টাকার কাজের দরপত্র জমা দেয়ার শেষদিন ছিল সোমবার। ওইদিন সকাল থেকে দরপত্র জমা দেয়ার নির্ধারিত স্থান নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাহারা বসায় ছাত্রলীগ নেতা ভিপি মঈন তুষার, জুবায়ের ও লিখনসহ অন্যরা। এ কারণে সাধারণ ঠিকাদাররা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
অবস্থা বেগতিক দেখে ওইদিন দুপুর ১২টায় মেসার্স সুলতান এন্টারপ্রাইজ-জেভির পক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রক্ষিত টেন্ডার বক্সে ৩ গ্রুপ কাজের দরপত্র জমা দিতে যান সুলতানের ব্যবসায়িক পার্টনার মিজানুর রহমান।
মিজান অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রক্ষিত টেন্ডার বক্সের কাছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মঈন তুষার, জুবায়ের ও লিখনসহ অন্যরা তার হাতে থাকা ৭৯ লাখ টাকার ব্যাংক গ্যারান্টিসহ তিনটি দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় সুলতান মাহমুদ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
একইভাবে মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের পক্ষে গোলাম মাওলা ফরহাদ এ কাজের চারটি দরপত্র জমা দিতে গেলে তাকেও ছাত্রলীগ নেতারা বাধা প্রদান করেন। পরে খবর পেয়ে ফরহাদের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ লোকজন নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে তাদের দরপত্র জমা দেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, জনস্বাস্থ্যের টেন্ডার দরপত্র ও ব্যাংক গ্যারান্টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আলম জানান, উল্লেখিত কাজের বিপরীতে বরিশাল ও ঢাকা অফিস থেকে ২২টি দরপত্র বিক্রি হলেও টেন্ডার বাক্সে জমা পড়েছে মাত্র পাঁচটি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মঈন তুষারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

No comments:

Post a Comment